Logo

আন্তর্জাতিক    >>   ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় থামবে ইউক্রেন যুদ্ধ? পুতিন দিলেন শর্ত

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় থামবে ইউক্রেন যুদ্ধ? পুতিন দিলেন শর্ত

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় থামবে ইউক্রেন যুদ্ধ? পুতিন দিলেন শর্ত

ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন, এবং তাঁর জয় নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। হোয়াইট হাউজে ফেরার পর ট্রাম্পের প্রথম বড় আন্তর্জাতিক ইস্যু হতে পারে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। ২০২৪ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয় অর্জন করার সময় থেকেই ট্রাম্প দাবি করে আসছেন, ক্ষমতায় গেলে তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই সংঘাত শেষ করবেন।

যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইতোমধ্যেই ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি আলোচনায় বসতে চান। তবে তাঁর কিছু শর্ত রয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের ভূখণ্ডগুলো নিয়ে কোনো বড় ছাড় দিতে রাজি নন পুতিন। এর পাশাপাশি তিনি চান ইউক্রেন যেন ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা পরিত্যাগ করে। এই শর্তগুলো মেনে নিলে রাশিয়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতে পারে।

পূর্ব ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া এবং খেরসন অঞ্চল ভাগাভাগি নিয়ে আলোচনার সুযোগ রাখার কথাও বলেছেন রাশিয়ার পাঁচজন সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। রাশিয়া বর্তমানে এই চার অঞ্চলের ৭০-৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে এবং এগুলোকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করে।

এছাড়া উত্তর ও দক্ষিণ ইউক্রেনের খারকিভ এবং মিকোলাইভের কিছু অংশ থেকে সেনা প্রত্যাহারের কথাও বিবেচনা করছে ক্রেমলিন। তবে এসব শর্ত বাস্তবায়ন হলে কেবল যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা তৈরি হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্প্রতি ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। এই পদক্ষেপ যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। রাশিয়া বলছে, এটি সংঘাত আরও তীব্র করার ঝুঁকি তৈরি করেছে।

পুতিন সম্প্রতি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির যেকোনো চুক্তি "যুদ্ধক্ষেত্রের বাস্তবতার নিরিখে" হবে। স্বল্পমেয়াদি যুদ্ধবিরতি পশ্চিমাদের জন্য ইউক্রেনের সামরিক শক্তি পুনর্গঠনের সুযোগ তৈরি করতে পারে বলেও তিনি শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

ট্রাম্প দাবি করেছেন, শান্তিচুক্তি করতে হলে তিনি সরাসরি পুতিনের সঙ্গে কথা বলতে প্রস্তুত। তাঁর লেখা বই "The Art of the Deal"-এ দেখানো হয়েছে, কীভাবে তিনি চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে সমঝোতার পথ বের করেন। ট্রাম্পের যোগাযোগ বিষয়ক পরিচালক স্টিভেন চেউং জানিয়েছেন, ট্রাম্প একমাত্র নেতা যিনি রাশিয়া এবং ইউক্রেনকে এক টেবিলে আনতে পারেন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতে ইতোমধ্যেই ইউক্রেনের ১৮ শতাংশ ভূখণ্ড রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। এই এলাকা আকারে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের সমান। ক্রেমলিনের তথ্য অনুযায়ী, দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝঝিয়া এবং খেরসনের বেশিরভাগ এলাকা রাশিয়ার অধীন থাকবে এমন একটি সমঝোতায় তারা রাজি হতে পারে।

এদিকে ইউক্রেনের সামরিক প্রধান ভ্যালেরি জালুঝনি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান সংঘাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। তাঁর মতে, রাশিয়ার মিত্র দেশগুলো সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছে।

যদি যুদ্ধবিরতির আলোচনা সফল না হয়, রাশিয়া সংঘাত চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে সূত্র। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইউক্রেনকে যে সমর্থন দিচ্ছে, তা সত্ত্বেও রাশিয়ার বিজয় ঠেকানো সম্ভব নাও হতে পারে।

ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে এটি নির্ভর করবে পুতিনের শর্ত, ট্রাম্পের কৌশল এবং ইউক্রেনের প্রতিক্রিয়ার ওপর।